কোভিড: আইসিডিডিআর'বি জরিপ করে ঢাকার ৭১% বাসিন্দার দেহে করোনার অ্যান্টিবডি পেয়েছে
আইসিডিডিআর'বি বলছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি নির্বাচিত বস্তি ও বস্তিসংলগ্ন এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যে, ঢাকায় ৭১ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ মানুষের দেহে করোনার অ্যান্টিবডি রয়েছে।
এর অর্থ হচ্ছে, নির্দিষ্ট এই এলাকাগুলোতে কী পরিমান মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সে সম্পর্কে একটা ধারণা মিলছে এই জরিপের ফলাফলে।
তবে এ তথ্য শুধুমাত্র যেখানে সমীক্ষা চালানো হয়েছে সেখানকার জন্য এবং যে সময়ে হয়েছে সে সময়ের জন্য প্রযোজ্য বলে বলছেন গবেষকরা।
ঢাকায় তিনটি বস্তি ও চট্টগ্রামে দুটি বস্তিতে এবং বস্তিগুলোর বাইরে কিন্তু কাছাকাছি এলাকায় গত অক্টোবর থেকে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গহীন মানুষের মধ্যে এ সমীক্ষাটি চালানো হয় বলে জানাচ্ছে আইসিডিআর'বি।
ঢাকায় এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আইসিডিডিআরবি'র গবেষক ডা. রুবহানা রাকিব ও ড. আবদুর রাজ্জাক ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে বস্তি ও বস্তির বাইরে বসবাসকারীদের মাঝে কোভিড-১৯ এর প্রভাবক কারণ-সমূহ শীর্ষক এ সমীক্ষা ফল উপস্থাপন করেন।
আইসিডিডিআরবি জানায় মোট ৩২২০ জন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চট্টগ্রামের তুলনায় ঢাকায় করোনায় অ্যান্টিবডি শনাক্তের হার বেশি। ঢাকায় যেটি ৭১%, চট্টগ্রামে তা ৫৫%। বয়স্ক ও তরুণদের এ হার প্রায় সমান।
অন্যদিকে নারীদের মধ্যে শনাক্তের হার ৭০.৬%, যা পুরুষদের (৬৬%) তুলনায় বেশি।
আবার যেসব অংশগ্রহণকারীদের (মোট ২২০৯) মাঝে সংক্রমণ পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশের এর ক্ষেত্রে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।
এ গবেষণায় দেখা গেছে যে স্বল্প শিক্ষিত, অধিক ওজন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রয়েছে যাদের, তাদের মাঝে অধিক মাত্রায় সেরোপ্রিভেলেন্স (রক্তে কোভিড উপস্থিতির হার) দেখা গিয়েছে।
অন্যদিকে বার বার হাত ধোয়ার প্রবণতা, নাক-মুখ কম স্পর্শ করা, বিসিজি টিকা গ্রহণ এবং মাঝারি ধরণের শারীরিক পরিশ্রম করা ব্যক্তিদের মাঝে কম মাত্রার সংক্রমণ দেখা গেছে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নিয়ে আইসিডিডিআর'বির প্রধান ড. তাহমিদ আহমেদ বলছেন, জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট কিংবা এ ধরণের তিনটি উপসর্গ থাকলেই মনে করতে হবে যে করোনা সংক্রমণ ঘটেছে এবং টেস্ট করাতে হবে।
তিনি বলেন, করোনা থেকে মুক্ত থাকতে অ্যাক্টিভিটি অর্থাৎ কায়িক পরিশ্রম বাড়ানো, মাস্ক পরা-সহ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপরই গুরুত্ব দেন তিনি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলছেন, আইসিডিডিআরবি'র এ গবেষণার তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো অধিকাংশই মৃদু লক্ষণযুক্ত বা কোন লক্ষণ নেই অর্থাৎ উপসর্গহীন যারা ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন তারা সেটি ছড়াতে সক্ষম।
একই সাথে যারা শারীরিক পরিশ্রম বেশি করছেন তাদের আক্রান্ত হবার ঝুঁকি কম সেটি এ গবেষণাতেও দেখা গেছে, বলছিলেন তিনি।